কোমরের ব্যথা কমানোর ঘরোয়া উপায়
কোমরের ব্যথা কমানোর ঘরোয়া উপায় জানার আগ্রহ প্রকাশ করে থাকেন অনেকেই। প্রায় সকলেই কম-বেশি কোমরের ব্যথা জনিত সমস্যায় ভুগে থাকেন। যদি আপনিও কোমরের ব্যথায় কষ্ট পেয়ে থাকেন তাহলে আজকের এই আর্টিকেল পোস্টটি আপনার জন্য।
এমন অনেক ব্যক্তি রয়েছে যারা কোমরের ব্যথায় কষ্ট পেয়ে ডাক্তারের কাছে হাজার হাজার টাকা খরচ করে ফেলেছে। কিন্তু তারপরও কোমরের ব্যথায় আরাম বোধ করছে না। কিন্তু তাদের হয়তো জানা নেই যে, কোমরের ব্যথা কমানোর বেশ কিছু ঘরোয়া উপায় রয়েছে। যার সাহায্যে অতি সহজে কোমরের ব্যথা কমানো যায়।
পোস্ট সূচিপত্রঃ কোমরের ব্যথা কমানোর ঘরোয়া উপায়
- কোমরের ব্যথা কমানোর ঘরোয়া উপায়
- কোমরের ব্যথায় কখন ডাক্তারের কাছে যাওয়া উচিত
- মেথি দিয়ে কোমরের ব্যথা কিভাবে কমানো যায়
- পান পাতা দিয়ে কোমরের ব্যথা কমানোর ঘরোয়া উপায়
- আদার চা খেলে কি কোমরের ব্যথা কমে
- কোমরের ব্যথা কমাতে হলুদের ব্যবহার
- রসুন দিয়ে কিভাবে কোমরের ব্যথা কমানো যায়
- কোমরের ব্যথা কমানোর জন্য নারিকেল তেল ও কর্পূর ব্যবহারের নিয়ম
- কোমরের ব্যথায় গরম সেঁক কতটা কার্যকরী
- কোমর ব্যথা কমাতে কোন খাবার খাওয়া উচিত
- কোমরের ব্যথায় অ্যালোভেরার ভূমিকা
- কোমর ব্যথা কমাতে লেবুর উপকারিতা
- আমার শেষ মতামত
কোমরের ব্যথা কমানোর ঘরোয়া উপায়
কোমরের ব্যথা কমানোর ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত ভাবে আলোচনা করা হয়েছে আজকের আর্টিকেল পোস্টে। অধিকাংশ মানুষেরই কোমরের ব্যথার সমস্যা হয়ে থাকে। কোমরের ব্যথা সাধারণত তাদের বেশি হয়ে থাকে। যারা দীর্ঘ সময় ধরে কম্পিউটারে বসে থাকে। আবার শোয়া বা বসার ভুলবশত কারণেও কোমরে ব্যথা হয়ে থাকে। এছাড়াও যারা কঠোর পরিশ্রমী এবং ভারী কোন জিনিস তোলার কারণেও কোমরের ব্যথা হতে পারে।
কোমরের এই প্রচন্ড ব্যথা যন্ত্রণার জন্য ডাক্তারের পরামর্শের পাশাপাশি বেশ কিছু ঘরোয়া উপায় রয়েছে যেগুলো দ্বারা অতি সহজেই প্রচন্ড ব্যথা যন্ত্রণা কমানো যায়। অবশ্যই তার জন্য আপনাকে জানতে হবে যে ঘরোয়া উপাদান গুলো কি কি যেগুলো দিয়ে কোমরের ব্যথা কমানো যাবে। চলুন তাহলে এবার জেনে নেওয়া যাক কোন উপাদানগুলো দ্বারা কোমরের ব্যথা কমানো সম্ভব। কোমরের ব্যথা কমানোর ঘরোয়া উপাদান গুলো নিম্নে উল্লেখ করা হলো-
- রসুন
- সরিষার তেল
- আদা
- নারিকেল তেল
- কর্পূর
- মেথি
- হলুদের গুঁড়া
- মধু
- দুধ
- ঘি
- পান পাতা
- চা
- লেবু
- অ্যালোভেরা
- হট ওয়াটার ব্যাগ
কোমরের ব্যথায় কখন ডাক্তারের কাছে যাওয়া উচিত
হঠাৎ যদি কোমরের ব্যথা হয় তাহলে ঘরোয়া উপায় গুলো ব্যবহার করে দ্রুত ব্যথা কমানো সম্ভব। কিন্তু যদি বারবার এই ব্যথা হতে থাকে। তাহলে অবশ্যই ঘরে বসে না থেকে ডাক্তারের কাছে যেতে হবে। ব্যথা হওয়ার কারণ কি নির্ণয় করে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ঔষধ সেবন করতে হবে। দীর্ঘদিন ধরে কোমরের ব্যথা হয়ে থাকলে অবহেলা না করে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়ায় উত্তম। আশা করছি, কোমরের ব্যথায় কখন ডাক্তারের কাছে যাওয়া উচিত এই বিষয়টি সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা পেয়ে গেছেন।
মেথি দিয়ে কোমরের ব্যথা কিভাবে কমানো যায়
কোমরে ব্যথা কমানোর ঘরোয়া উপায় এর মধ্যে মেথি একটি কার্যকরী উপাদান। শুনলে হয়তো অবাক হবেন যে মেথি দিয়ে আবার কোমরে ব্যথা কিভাবে সারানো যায়। কিন্তু অবাক হবার মত কিছু না আসলে এটা বাস্তব যে, মেথি রান্নার কাজে মসলা হিসেবে ব্যবহার করার পাশাপাশি কোমরের ব্যথা সারাতেও ভীষণভাবে কার্যকরী। কিন্তু তার জন্য আপনাকে জানতে হবে মেথির সঠিক ব্যবহার। মেথি কিভাবে ব্যবহার করলে কোমরের ব্যথা সারানো যাবে।
আপনি যদি মেথি দিয়ে কোমরের ব্যথা সারাতে চান তাহলে সর্বপ্রথম মেথি বীজ ভালো করে শুকিয়ে গুঁড়ো করে নিন। এরপর মেথির গুঁড়ো হালকা গরম দুধে মিশিয়ে এটি পেস্ট তৈরি করুন। দুধ ও মেথি গুড়োর পেস্ট তৈরি করা হয়ে গেলে আপনার ব্যথা কৃত স্থান অর্থাৎ কোমরের ব্যথা সারাতে কোমরের ব্যাথার স্থানে দুধ ও মেথি গুঁড়ার পেস্ট মালিশ করুন। তাহলে অতি দ্রুত আপনি কোমরের ব্যথায় আরাম বোধ করবেন।
পান পাতা দিয়ে কোমরের ব্যথা কমানোর ঘরোয়া উপায়
কোমরের ব্যথা কমানোর ঘরোয়া উপায় জানার পাশাপাশি এবার জেনে নিন পান পাতা দিয়ে কিভাবে কোমরের ব্যথা কমানো যায়। আপনি যদি পান পাতা দিয়ে কোমরের ব্যথা কমাতে চান। তাহলে প্রথমে আপনাকে যা করতে হবে তা হলো একটি পান পাতা নিয়ে ওই পান পাতার ওপরে ঘি লাগাতে হবে। ঘি লাগানো হয়ে গেলে সেটি গরম করে কোমর বা পিঠে কিংবা ব্যথাকৃত স্থানে সেঁক দিতে হবে। এরকমটা করলে কিছুক্ষণের মধ্যে ব্যাথায় আরাম পাওয়া যাবে।
আদার চা খেলে কি কোমরের ব্যথা কমে
আদা ব্যথা উপশম করতে খুবই কার্যকরী একটি ঔষধি উপাদান। আদা রান্নার কাজে মসলা হিসেবে ব্যবহার করা হয়ে থাকলেও ব্যথা উপশমে আদার ব্যবহার দেখা যায়। আপনি যদি আদা দিয়ে আপনার কোমরের ব্যথা দূর করতে চান তাহলে আদার চা বানিয়ে পান করুন। আদার চা বানানোর জন্য প্রথমে আপনাকে এক টুকরো আদা ছিলে পরিষ্কার করে ধুয়ে নিতে হবে। এরপর আদা থেঁতো করে নিতে হবে। আদা থেঁতো হয়ে গেলে গরম পানিতে ফুটিয়ে নিতে হবে।
গরম পানিতে আদা কিছুক্ষণ ফোটানো হয়ে গেলে নামিয়ে ছেকে নিতে হবে। এরপর আদা দিয়ে ফোটানো পানি হালকা কুসুম গরম হয়ে এলে পান করতে হবে। এভাবে যদি আধার তৈরি চা খাওয়া যায় তাহলে আপনার কোমরের ব্যথা উপশম করবে এবং আপনি ব্যথায় আরামবোধ করবেন।
কোমরের ব্যথা কমাতে হলুদের ব্যবহার
কোমর ব্যথা কমানোর ঘরোয়া উপায় হিসেবে হলুদের ব্যবহার হয়ে আসছে আদিকাল থেকে। বহু যুগ বা বহু বছরের পুরনো হলুদের ঔষধি ব্যবহার। ব্যাথা নাশক হিসেবে হলুদের ব্যাপক ব্যবহার রয়েছে। আগের যুগের মুরব্বি কিংবা দাদি নানিরা পায়ে চোট পেলেও হলুদের ঔষধি ব্যবহার করে থাকতো।আবার বর্তমান সময়েও ব্যথা নির্মূল করতে হলুদ ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এমনকি কোমর ব্যথা সারাতে হলুদের ব্যবহার অপরিহার্য।
কোমরের ব্যথা সারাতে হলুদ যেভাবে ব্যবহার করবেন তা হলো গরম দুধের সঙ্গে হলুদের গুড়ো ও সামান্য মধু মিশিয়ে পান করতে হবে। এভাবে যদি আপনি হলুদ ও দুধ পান করে থাকেন তাহলে আপনার কোমরের ব্যাথা অতি শীঘ্রই কমে যাবে এবং আপনি আরাম বোধ করবেন।
রসুন দিয়ে কিভাবে কোমরের ব্যথা কমানো যায়
ব্যথা উপশমে রসুন খুবই কার্যকরী। হাত, পা এবং শরীরের যে কোন অঙ্গ পতঙ্গের ব্যাথা সারাতে রসুন এর ব্যাপক ব্যবহার রয়েছে। কোমর ব্যাথা সারাতেও রসুনের গুরুত্ব অপরিসীম। কোমরের অতিষ্ঠ ব্যথা যন্ত্রণায় আরাম পেতে চাইলে সরিষা তেলের মধ্যে রসুন, মেথি ও কালোজিরা দিয়ে ভেজে নিতে হবে এবং ফুটন্ত ওই তেল হালকা কুসুম গরম হয়ে এলে ব্যথাকৃত স্থানে ওই তেল দিয়ে মালিশ করতে হবে। এভাবেই অল্প সময়ের মধ্যে প্রচন্ড ব্যথা যন্ত্রণা কমানো সম্ভব হয়।
আপনি চাইলে আপনার কোমর ব্যথা কমাতে রসুন তেলের ব্যবহার করতে পারেন। তবে মনে রাখতে হবে যেন রসুনের তৈরিকৃত তেল যেন ঠান্ডা না হয়ে যায়। হালকা কুসুম গরম অবস্থায় ব্যাথার স্থানে মালিশ করতে পারলে বেশি উপকার পাওয়া যায়। তাই কোমর ব্যথা কমাতে হালকা কুসুম গরম রসুন তেল মালিশ করুন।
কোমরের ব্যথা কমানোর জন্য নারিকেল তেল ও কর্পূর ব্যবহারের নিয়ম
কোমরে ব্যথা কমানোর ঘরোয়া উপায় হিসেবে নারিকেল তেল ও কর্পূর ব্যবহার করতে পারেন। আপনি যদি কর্পূর ও নারিকেল তেল দিয়ে কোমরের ব্যাথা সারাতে চান তাহলে আপনাকে যা করতে হবে তা হল- নারিকেল তেলের মধ্যে কর্পূর মিশিয়ে গরম করে নিতে হবে। ঠান্ডা হয়ে এলে কোমরের ব্যথার স্থানে এই তেল মালিশ করতে হবে। এভাবে আপনি যদি নারিকেল তেল ও কর্পূর ব্যবহার করে থাকেন তাহলে মুহূর্তের মধ্যে আপনার ব্যথা সেরে যাবে।
কোমরের ব্যথায় গরম সেঁক কতটা কার্যকরী
কোমরের ব্যথায় গরম সেঁক খুবই কার্যকরী বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞেরা। কারণ গরম সেঁকে ব্যথায় আরাম বোধ হয়। আপনি যদি কোমরের ব্যথায় কষ্ট পান এবং ডাক্তারের শরণাপন্ন হন তাহলে সর্বপ্রথম ডাক্তার আপনাকে ঘরোয়া এই পরামর্শটি দিয়ে থাকবে যে আপনি বাড়িতে গরম পানির সেঁক দিন। আর আপনি যদি গরম পানির সেঁক দিতে চান তাহলে বাজার থেকে হট ব্যাগ কিনে নিয়ে আসুন এবং ব্যাগের মধ্যে গরম পানি ভরে আপনার কোমরে সেঁক দিন।
কোমর ব্যথা কমাতে কোন খাবার খাওয়া উচিত
কোমরের ব্যাথা সারাতে ক্যালসিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম জাতীয় খাবার খাওয়া উচিত। আপনার যদি কোমরের ব্যথা হয়ে থাকে। তাহলে আপনি প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম ও ম্যাগ্নেশিয়াম সমৃদ্ধ খাবার যেমন- দুধ, ঘি, পনির, ফল, শাকসবজি, বাদাম ইত্যাদি খেতে পারেন। এতে আপনার শরীরে ক্যালসিয়ামের ও ম্যাগনেসিয়াম এর ঘাটতি পূরণ হবে। ফলে হাড় ও মাংস পেশীর ক্ষয়জনিত ব্যথা সেরে যাবে। আশা করছি বিষয়টি বুঝতে পেরেছেন।
কোমরের ব্যথায় অ্যালোভেরার ভূমিকা
কোমর ব্যথা দূর করতে এলোভেরার ভূমিকা রয়েছে। আপনি যদি প্রতিদিন নিয়ম করে অ্যালোভেরার শরবত খেতে পারেন তাহলে আপনার চিরতরে কোমরের ব্যাথা নির্মূল হয়ে যাবে। তাই বিশেষজ্ঞদের মতে, কোমর ব্যথা চিরতরে নির্মূল করতে অ্যালোভেরার গুরুত্ব অপরিসীম বলে মনে করেন। তাই একজন ডাক্তার কোমর ব্যথার রোগীকে পরামর্শ দিয়ে থাকেন দৈনিক নিয়ম করে অ্যালোভেরার শরবত পান করার। তাই কোমর ব্যথায় আপনিও উপকৃত হতে অ্যালোভেরা শরবত খেতে পারেন।
কোমর ব্যথা কমাতে লেবুর উপকারিতা
অনেকেই আগ্রহ প্রকাশ করেন যে কোমর ব্যাথা কমাতে লেবুর উপকারিতা কি। তাদেরকে উদ্দেশ্য করে বলবো যে, কোমর ব্যথাতে লেবুর কার্যকারিতা রয়েছে। কারণ লেবু ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার। লেবুতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি রয়েছে। যার কারণে ব্যথা যন্ত্রণা উপশমে কার্যকরী। আপনি জানেন নিশ্চয় যে, ভিটামিন সি ব্যথা উপশম করতে বা যন্ত্রণা নির্মূল করতে সাহায্য করে থাকে। আর তাই কোমরের যন্ত্রণা দূর করতে লেবুর শরবত পান করতে হবে।
আমার শেষ মতামত
কোমরের ব্যথা কমানোর ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হয়েছে এতক্ষণ পর্যন্ত আলোচনার মাধ্যমে। আশা করছি, আজকের এই আর্টিকেল পোস্টটি পড়লে আপনি উপকৃত হবেন।তাই এখন পর্যন্ত যদি আর্টিকেল পোস্টটি আপনার পড়া না হয়ে থাকে। তাহলে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সম্পূর্ণ আর্টিকেল পোস্ট পড়ে নিবেন। আমাদের ডিজিটাল মার্কেটিং আইটি এই ওয়েবসাইটটিতে নিয়মিতভাবে আপডেট তথ্যমূলক আর্টিকেল পোস্ট পাবলিশ করা হয়ে থাকে।
তাই এইরকম আরো আপডেট তথ্যমূলক আর্টিকেল পোস্ট পেতে আমাদের ডিজিটাল মার্কেটিং আইটি এই ওয়েবসাইট এ প্রকাশিত আর্টিকেল পোস্ট পড়ুন। সবশেষে বলবো আজকের এই আর্টিকেল পোস্টটি পড়ে আপনার কেমন লেগেছে মন্তব্য করে জানাবেন এবং এতক্ষণ পর্যন্ত আপনার মূল্যবান সময় দিয়ে ধৈর্য সহকারে আর্টিকেল পোস্টটি পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
ডিজিটাল মার্কেটিং আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্টে রিভিউ করা হয়।
comment url