OrdinaryITPostAd

ডেঙ্গু জ্বরের লক্ষণ ও প্রতিকার সম্পর্কে জেনে নিন

আজকের আর্টিকেল ডেঙ্গু জ্বরের লক্ষণ ও প্রতিকার সম্পর্কে জেনে নিন বিস্তারিতভাবে। বিষয়টি জানা অত্যন্ত জরুরী। তাই এই বিষয়টি সম্পর্কে জানতে পুরো পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।

আপনি যদি আমাদের সঙ্গে শেষ পর্যন্ত থাকেন। তাহলে, ডেঙ্গু জ্বরের লক্ষণ ও প্রতিকার সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন। তাহলে চলুন আর কথা না বাড়িয়ে ডেঙ্গু জ্বরের লক্ষণ এবং প্রতিকার সম্পর্কে জেনে নেয়া যাক।

পোস্ট সূচিপত্রঃ জেনে নিন ডেঙ্গু জ্বরের লক্ষণ ও প্রতিকার সম্পর্কে বিস্তারিত

ডেঙ্গু জ্বরের লক্ষণ ও প্রতিকার সম্পর্কে আলোচনা করা হলো সম্পূর্ণ পোস্টে 

ডেঙ্গু জ্বরের লক্ষণ ও প্রতিকার সম্পর্কে জেনে নিন। ডেঙ্গু জ্বরের বিশেষ কিছু লক্ষণ সমূহ উল্লেখিত রয়েছে। ডেঙ্গু জ্বরের উপসর্গ গুলোর মধ্যে বেশ কিছু উপসর্গ উল্লেখ করা হলো-

১। জ্বর হওয়া

২। রক্তক্ষরা ডেঙ্গু জ্বর

৩। ডেঙ্গু-শক সিনড্রোম

আরো পড়ুনঃ জেনে নিন শীতকালীন ১৫টি খাদ্যের পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা সম্পর্কে 

১। জ্বর হওয়াঃ ডেঙ্গু জ্বরের এডিস মশার ভাইরাসের সংক্রমণ থেকে নানা রকমের উপসর্গ দেখা হতে পারে। ডেঙ্গু জ্বর এমন একটি ভয়ানক সংক্রমণ রোগ যা দ্বারা মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। সচরাচর ভাবে দৃশ্য ডেঙ্গু জ্বর বলতে প্রায় ক্লাসিক্যাল ডেঙ্গু জ্বর বলা হয়ে থাকে। ক্লাসিকাল ডেঙ্গু জ্বর তীব্র ধরনের জ্বর যাতে করে হঠাৎ জ্বর দেখা দেয়। 

এছাড়াও আরো কিছু লক্ষণ দেখা যায় যেমন- চক্ষু গোলকে ব্যাথা, বমনেচ্ছা, মাথার সামনের দিকে ব্যথা, বমি এবং লাল ফুসকুড়ি। আবার প্রায়ই চোখে প্রদাহ এবং মারাত্মক পেট ব্যথা হতে পারে। এ সকল লক্ষণগুলো সাধারণভাবেই পাঁচ থেকে সাত দিন স্থায়ী হয়। এবং ডেঙ্গু জ্বর হওয়ার রোগী সাত দিন ছাড়াও আরো কিছুদিন ক্লান্তি বোধ করে এবং এরপর সেরে ওঠে।

২। রক্তক্ষরা ডেঙ্গু জ্বরঃ রক্তক্ষরা ডেঙ্গুজ্বর প্রধানত দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার শিশুদের একটি রোগ।রক্তক্ষরা ডেঙ্গু হলো ডেঙ্গু রোগের একটি মারাত্মক লক্ষণ। রক্তক্ষরা ডেঙ্গু জ্বরের লক্ষণগুলো বয়স নির্বিশেষে ভিন্ন ভিন্ন হয়ে থাকে। রক্তক্ষরা ডেঙ্গু জ্বরের শুরুতেই দেহের তাপ বেড়ে ৩৮০ থেকে ৪০০ডিগ্রী সেলসিয়াস পর্যন্ত স্থায়ী হয়। 

সেই সাথে একই রকম তাপমাত্রা ২ থেকে ৭ দিন পর্যন্ত চলে। এই রোগের লক্ষণ হিসেবে ক্রমাগত জ্বর লেগে থাকে। সেই সাথে মাথা ব্যথা, দুর্বলতা ,মাংস পেশীর তীব্র ব্যথা, অস্থি সন্ধি ইত্যাদি উপসর্গ দেখা যায়। কিছু কিছু ক্ষেত্রে শ্বাসতন্ত্রের অর্ধাংশের সংক্রমণ দেখা দেয়। এ রোগটি হালকা ভাবে শুরু হলেও আশঙ্কা ত্বকের অভ্যন্তরে রক্তক্ষরণ ও কান দিয়ে রক্তক্ষরণ শুরু হয়।

৩। ডেঙ্গু-শক সিনড্রোমঃ ডেঙ্গু-শক সিনড্রোম রক্তক্ষরা ডেঙ্গুরই আরেকটি সিনড্রোম। ডেঙ্গু-শক সিনড্রোম সংকুচিত নারী, নিম্ন রক্তচাপ এবং সুস্পষ্ট শক সহ রক্ত সঞ্চালনের তারতম্য সৃষ্টি করে। দেহের বাইরে থেকে যকৃত স্পর্শ করা যায় ও নরম হয়ে ওঠে। 

ডেঙ্গু-শক সিনড্রোম-এর লক্ষণ হিসেবে পদার্থের জন্ডিস অব্যাহত পেট ব্যথা, থেমে থেমে বমি, অস্থিরতা বা অবসন্নতা এবং হঠাৎ জ্বর ছেড়ে ঘাম শরীর ঠান্ডা হওয়া ও দেহ সম্পন্ন নেতিয়ে পড়া। ডেঙ্গু জ্বরের লক্ষণ ও প্রতিকার সম্পর্কে জেনে নিন। এই বিষয়ে আলোচনা করা হলো সম্পূর্ণ পোস্টে।

ডেঙ্গু জ্বর প্রতিকার সম্পর্কেঃ ডেঙ্গু যার প্রতিকারের বিষয়ে বাংলাদেশে তেমন কোন উদ্যোগ নেই। সাধারণ স্প্রের মাধ্যমে এডিস মশা নিধন করা সম্ভব না। ফলে ডেঙ্গু জ্বর কে প্রতিকার করতে আমাদেরই বিশেষ কিছু করণীয় হলো-বাড়ির আনাচে কানাচে পানি জমতে না দেওয়া যেমন নারিকেলের খোসা, ফুলের টব, পরিত্যক্ত টায়ার ইত্যাদিতে জমে থাকা পানি নিয়মিত ফেলে দিতে হবে।

ঘুমানোর সময় মশারি টাঙিয়ে ঘুমোতে হবে। নিজে সতর্ক থাকার মাধ্যমে ডেঙ্গু জ্বর প্রতিকার সম্ভব। এই রোগটি সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে প্রতিরোধ সম্ভব। সিটি কর্পোরেশন ও বিভিন্ন সংস্থার পাশাপাশি সম্মিলিতভাবে সবাই নিজ নিজ স্থান থেকে প্রচেষ্টা চালাতে হবে যেন এডিস মশার জন্ম না নেই। 

স্কুল কলেজ অফিস ও কারখানা সহ বাড়ির আশেপাশে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে আর কোন স্থানে যেন পানি না জমে সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। এভাবে এডিস মশা বৃদ্ধি পাবে না এবং ডেঙ্গু জ্বর প্রতিরোধ করা সম্ভব হবে।

ডেঙ্গু জ্বর কি

ডেঙ্গু জ্বরের লক্ষণ ও প্রতিকার সম্পর্কে জেনে নিন। এ বিষয়ে জানার আগ্রহ প্রকাশ করে অনেকেই। এবার আপনাদের জানাবো ডেঙ্গু জ্বর কি? ডেঙ্গু জ্বর একটি এডিস মশা বাহিত রোগ। এ রোগটি ডেঙ্গু ভাইরাস জনিত। ডেঙ্গু জ্বর সাধারণত গ্রীষ্মমন্ডলি। গ্রীষ্মকালে ডেঙ্গু জ্বরের উপদ্রব বেশি দেখা দেয়। এডিস ইজিপ্টাই নামোক মশার কামড়ে ডেঙ্গু জ্বরের উৎপত্তি। 

লেডিস মশা বা স্ত্রী মশা ডেঙ্গু ভাইরাসের প্রধান বাহক। যেগুলোর মধ্যে  এডিস ইজিপ্টাই মশাই প্রধান। এডিস মশার ভাইরাস এর মধ্যে পাঁচটি সেরোটাইপ পাওয়া যায়। এডিস মশার ভাইরাস টির একটি সেরোটাইপ সংক্রমণ করলে সে সেরোটাইপের বিরুদ্ধে রোগী আজীবন প্রতিরোধ ক্ষমতা অর্জন করে। 

কিন্তু ভিন্ন সেরোটাইপের বিরুদ্ধে সাময়িক প্রতিরোধ ক্ষমতা অর্জন করে। পরবর্তীতে ভিন্ন সেরোটাইপ এর ডেঙ্গু ভাইরাস সংক্রমিত হলে রোগের মারাত্মক জটিলতা দেখা দিতে পারে। 

ডেঙ্গু প্রধানত দুই ধরনের হয়ে থাকে -

  • ক্লাসিক্যাল ডেঙ্গু ফিভার 
  • ডেঙ্গু হেমোরেজিক  ফিভার

ক্লাসিক্যাল ডেঙ্গু ফিভার হচ্ছে ডেঙ্গুর এক নতুন ধরনের উপসর্গ। চিকিৎসকরা বলে থাকেন যে, ক্লাসিক্যাল ডেঙ্গুর লক্ষণ হিসেবে দেখা দিতে পারে জ্বর, হাড় ও পেশিতে ব্যথা, শরীরে ফুসকুড়ি, চোখের পেছনে ব্যথা ইত্যাদি।  এর আগে ডেঙ্গু জ্বরের অনেক বেশি তাপমাত্রা দেখা দিত কিন্তু এখন নতুন কিছু উপসর্গ লক্ষ্য করা যায়।

ডেঙ্গু হেমোরেজিক ফিভার যা রক্তক্ষরী জ্বর হিসেবে পরিচিত এই রোগটি মাঝে মাঝে মারাত্মক রক্তক্ষরণী রূপ নিতে পারে। এর ফলে রক্তপাত হয়, রক্ত অনুসক্রিকার মাত্রা কমে যায় এবং রক্ত প্লাজমার নিঃসরণ ঘটে। কখনো কখনো আবার ডেঙ্গু শক সিনড্রোম দেখা যায়। রক্তচাপ বিপজ্জনকভাবে কমে যায়। 

ডেঙ্গু ভাইরাসজনিত মশা কোন ব্যক্তিকে কামড়ালে, সেই ব্যক্তি ৪ থেকে ৬ দিনের মধ্যে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে থাকে। আবার ডেঙ্গু আক্রান্ত ব্যক্তিকে কোন জীবাণুবিহীন মশা কামড়ালে সে মশারটিও ডেঙ্গু জ্বরের জীবাণুবাহী মশাই পরিণত হয়। এভাবে একজন থেকে অন্যজনে মশার মাধ্যমে ডেঙ্গু ছড়িয়ে থাকে।

ডেঙ্গু জ্বর কেন হয়

ডেঙ্গু জ্বরের লক্ষণ ও প্রতিকার সম্পর্কে জেনে নিন। এ বিষয়টি আলোচনা করা হয়েছে। ডেঙ্গু জ্বর হলো একটি ডেঙ্গু মশার ভাইরাস ঘটিত সংক্রামক রোগ। এই রোগটি সাধারণত মশার কামড়ে হয়ে থাকে। সাধারণত মানুষের বসবাসের আবাসস্থলের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট দিনের বেলায় দংশনকারী এডিস মশা ডেঙ্গু জ্বর ভাইরাসের বাহক। 

এডিস মশার ভাইরাস কামরের মাধ্যমে মানব শরীরে প্রবেশ করে এবং ডেঙ্গুজ্বর হয়ে থাকে। রোগীকে এডিস মশা দংশনের দুই সপ্তাহ পর মশা সংক্রমণক্ষম হয়ে ওঠে এবং গোটা জীবনকেই সংক্রমণশীল করে থাকে। এডিস মশা জনগোষ্ঠীর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট থেকেই বংশবৃদ্ধি করে থাকে এদের লার্ভা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই জমে থাকা পানি থেকে সৃষ্টি হয়। 

এছাড়া বেশিরভাগ পরিত্যক্ত টায়ার, বালতি, ফেলে দেয়া নারকেলের খোল, ফুলদানি, ফুলের টবের নিচের থালায় জমে থাকা পানিতে এমন এডিস মশা জন্ম নেয়। বর্তমানে সারাদেশের মানুষই এডিস মশাই আক্রমণে সংক্রমিত হচ্ছে ডেঙ্গু জ্বরে। আবার কিছু কিছু ক্ষেত্রে প্রাকৃতিক স্থানে গাছের গর্তে ও এ মশার জন্ম নিয়ে থাকে। 

পূর্ণবয়স্ক মশা সেগুলো সাধারণত ঘরের ভেতরে অন্ধকার স্থান যেমন আলমারির পেছনে খাট বা বিছানার নিচে এ ধরনের মশা থাকতে পারে। এ প্রজাতির মশাগুলো দিনের বেলায় ভয়ঙ্কর রূপ ধারণ করে। বেশিরভাগ কামড়ের ঘটনায় ঘটে সকালের প্রথম দিকে এবং বিকেলের শেষ দিকে। 

কোন আক্রান্ত লোকের রক্ত খেয়ে থাকলেও মশা সংক্রমিত হয়ে থাকে। মশার সংক্রমণ ক্ষমতা সম্পন্ন হয়ে উঠলে মানুষের শরীর থেকে রক্ত শোষণের সময় এমনকি ত্বকে সুর ঢুকালেও ডেঙ্গু সংক্রমণ ঘটতে পারে।

ডেঙ্গু জ্বর কখন হয়

ডেঙ্গু জ্বরের লক্ষণ ও প্রতিকার সম্পর্কে জেনে নিন। এই বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। বছরে প্রায় অধিকাংশ সময় ডেঙ্গু জ্বর হয়ে থাকে। যেহেতু এটি গ্রীষ্ম মণ্ডলীয় ভাইরাস। সেক্ষেত্রে মে থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বিশেষ করে গরম এবং বর্ষায় এ দুটো সময়টাতেই ডেঙ্গু জ্বরের প্রকোপ বেশি হয়ে থাকে। 

তবে হ্যাঁ শীতকালে ডেঙ্গু জ্বর হয় না বললেই চলে। লার্ভা অবস্থায় ডেঙ্গু মশা অনেকদিন পর্যন্ত  বাঁচতে  পারে। বর্ষার শুরুতে সেগুলো আবার নতুন করে ডেঙ্গু ভাইরাস বাহিত মশার বিস্তার লাভ করে। মশা কামরের তিন থেকে ছয় দিনের মধ্যে ডেঙ্গু রোগ সংক্রমিত হয়ে থাকে। 

তাই কোন মৌসুমেই ডেঙ্গু মশাকে অবহেলা করা চলবে না। বিশেষ করে জন সচেতনতার গুরুত্ব আরোপ করতে হবে। মশাবাহিত রোগ থেকে বাঁচতে সারা বছরই সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।

ডেঙ্গু জ্বর হলে কি খাবে

ডেঙ্গু জ্বরের লক্ষণ ও প্রতিকার সম্পর্কে জানার পাশাপাশি আপনার ডেঙ্গু জ্বর হলে কি খাবেন? ডেঙ্গু সংক্রমণের হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য রোগীর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে হবে। তাই রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সঠিক খাবারের প্রয়োজন। 

ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত রোগীদের ডায়েট সম্পর্কে যত্ন নেওয়া উচিত। যা সুস্থ করতে এবং পুনরুদ্ধারে সহায়তা করবে। আমাদের মনে রাখতে হবে ভিটামিন ও পুষ্টি সমৃদ্ধ খাবারই রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে এবং ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়তে সক্ষম হয়।

ডেঙ্গু জ্বর হলে পরীক্ষা কখন করাবেন

ডেঙ্গু জ্বরের লক্ষণ ও প্রতিকার সম্পর্কে জেনে নিন। এই বিষয়টি জানার পাশাপাশি আমাদেরকে ডেঙ্গু জ্বর হলে পরীক্ষা কখন করবেন জেনে রাখতে হবে। জ্বর দেখা দিলে প্রথমত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে । সেটি যেকোনো প্রকারের জ্বর হতে পারে। ডেঙ্গু জ্বরের প্রথম ১০ দিনের পরীক্ষার ফলাফল ভিন্ন ভিন্ন হতে পারে কাজে নিজে নিজে পরীক্ষা করলে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হতে পারে।

যে কারণে চিকিৎসকের সিদ্ধান্ত নেওয়াই উত্তম। ডেঙ্গু এনএস১ নেগেটিভ হলেই যে ডেঙ্গু হয়নি তা শতভাগ নিশ্চিন্ত করে বলা কঠিন। লক্ষণ উপসর্গ অন্যান্য পরীক্ষার ফলাফলের উপসর্গের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত। এর সঙ্গে অন্যান্য অনেক পরীক্ষা আছে যা গুরুত্বপূর্ণ।

ডেঙ্গু জ্বর হলে কি কি পরীক্ষা করা উচিত

ডেঙ্গু জ্বরের লক্ষণ ও প্রতিকার সম্পর্কে জেনে নিন। এই বিষয়টি জানার পাশাপাশি ডেঙ্গু জ্বর হলে কি কি পরীক্ষা করা উচিত আমাদেরকে জানতে হবে। ডেঙ্গু জ্বরে খুব বেশি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার প্রয়োজন নেই। জ্বরের ৪ থেকে৫ দিন পরে সিবিসি ও প্লাটিলেট করা যথেষ্ট। ৪-৫ দিনের আগে পরীক্ষা করালে রিপোর্ট বিভ্রান্তিমূলক হতে পারে।

ডেঙ্গু এন্টিবডির পরীক্ষা পাঁচ থেকে ছয় দিন পর করা উত্তম। প্রয়োজনমূলকভাবে ব্লাড সুগার, লিভারের পরীক্ষা, এসিজি ইত্যাদি করা যাবে। এছাড়া কোন কোন ক্ষেত্রে আবার পেটের আলতোসনোগ্রাফ, বুকের এক্সরে ইত্যাদি করা যাবে। চিকিৎসক যদি মনে করেন রোগী ডিআইজি জাতীয় জটিলতায় আক্রান্ত হয়েছে সে ক্ষেত্রে  এপিটিটি,  ডি-ডাইমার পরীক্ষা করাতে পারে।

ডেঙ্গু জ্বরের চিকিৎসা

ডেঙ্গু জ্বরের লক্ষণ ও প্রতিকার সম্পর্কে জেনে নিন। এই বিষয়ে আলোচনা করেছি। এবার আপনাদের জানাবো ডেঙ্গু জ্বরের চিকিৎসা সম্পর্কে। ডেঙ্গু জ্বরটা আসলে গোলমেলে রোগ অধিকাংশ ক্ষেত্রে এর লক্ষণ অনুযায়ী চিকিৎসা দিতে হয়। তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক ডেঙ্গু জ্বরের চিকিৎসা কি?

সম্পূর্ণভাবে ভালো না হওয়া পর্যন্ত বিশ্রাম নিতে হবে। যথেষ্ট পরিমাণে পানি পান করতে হবে যেমন-শরবত ডাবের পানি ও অন্যান্য তরল জাতীয় খাবার খেতে হবে। আর যদিখেতে না পারা যায় তাহলে দরকার শিরা পথে স্যালাইন দেওয়ার। জ্বর কমানোর জন্য শুধুমাত্র প্যারাসিটামল জাতীয় ঔষধ যথেষ্ট। 

কোনোভাবে ব্যাথা নাশক ওষুধ খাওয়া যাবেনা। এতে করে রক্তক্ষরণের ঝুঁকি বাড়বে। আর জ্বর কমানোর জন্য ভেজা কাপড় দিয়ে গা মোছাতে  হবে।

ডেঙ্গু জ্বর কাদের বেশি হয়

ডেঙ্গু জ্বরের লক্ষণ ও প্রতিকার সম্পর্কে জেনে নিন। এই বিষয়টি জানার পর জানতে হবে ডেঙ্গু জ্বর কাদের বেশি হয়। সাধারণত সহর অঞ্চলে ও অভিজাত এলাকায় এ জ্বরে আক্রান্ত হয় বেশি। কারণএ সকল পরিবেশ অত্যন্ত নোংরা পরিত্যক্ত হয়ে থাকে। যার ফলে শহর অঞ্চলে ও অভিজাত এলাকায় বড় বড় দালানকোঠায় এ মশার পাদুর্ভাব বেশি হয়ে থাকে। 

অপরদিকে বস্তি বা গ্রামে বসবাসরত লোকজনের ডেঙ্গু কম হয় একেবারে হয় না বললেই চলে। পরিশেষে বলা যায় যে, গ্রামের থেকে শহরাঞ্চলের মানুষের মধ্যে ডেঙ্গু জ্বর বেশি দেখা যায়।

হৃদ রোগীদের ডেঙ্গু সর্তকতা

ডেঙ্গু জ্বরের লক্ষণ ও প্রতিকার সম্পর্কে জানার পাশাপাশি আপনাদের জানতে হবে হৃদ রোগীদের ডেঙ্গু সর্তকতা সম্পর্কে। বয়স্ক রোগীদের মধ্যে যারা হৃদরোগ, ডায়াবেটিক, ও স্ট্রোকে আক্রান্ত তাদের জন্য ডেঙ্গুজ্বর সর্বাধিক ঝুঁকিপূর্ণ। 

এ সকল রোগীদের ডেঙ্গু জ্বর ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় বিশেষ সর্তকতার সাথে চিকিৎসা গ্রহণ করতে হবে। ডেঙ্গুজ্বরকেঅবহেলা করা যাবে না। হৃদ রোগীদের ডেঙ্গু সম্পর্কে সচেতন হতে হবে। এবং অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণভাবে ডেঙ্গু জ্বরকে মোকাবেলা করতে হবে।

ডায়াবেটিস রোগী ও ডেঙ্গু

ডেঙ্গু জ্বরের লক্ষণ ও প্রতিকার সম্পর্কে জেনে নিন। এই বিষয়টি জানার পাশাপাশি ডায়াবেটিস রোগী ও ডেঙ্গু সম্পর্কে জেনে রাখা উচিত। বাংলাদেশের প্রায় ১ কোটিরও বেশি মানুষ ডায়াবেটিস রোগে ভুগছে।সব বয়সের নারী-পুরুষেরই ডেঙ্গু রোগের ঝুঁকি রয়েছে। ডায়াবেটিক রোগীদের গ্লুকোজের কারণে রক্তের ঘনত্ব বেড়ে যায়। শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়।

পানি শূন্যতার ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়। আর যাদের ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে নেই তাদের রক্তের গ্লুকোজ কাঙ্ক্ষিত মাত্রার চেয়েও বেশি। এ কারণে ডায়াবেটিস রোগীদের ডেঙ্গু হলে অনেক ঝুঁকিপূর্ণ। ডায়াবেটিকস রোগীদের ডেঙ্গু হলে ক্ষতির তীব্রতা বেড়ে যায়।

ডায়াবেটিকস রোগীরা ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হলে তাদের রক্তের প্লাটিনাম দ্রুতই কমতে থাকে। একই সাথে দেহের ভেতরে বাইরে রক্তক্ষরণের আশঙ্কা বেড়ে যায়। এ সকল কারণবশতই ডায়াবেটিস রোগীদের একটু বেশি সতর্ক থাকতে হবে। এবং ডেঙ্গু জ্বরের লক্ষণ দেখা দিলে সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।

মশারা বেশি কামড়ায় যাদের

ডেঙ্গু জ্বরের লক্ষণ ও প্রতিকার সম্পর্কে জানার পাশাপাশি, আপনাদের জানতে হবে মশারা বেশি কামড়ায় কাদের? মশারা কমবেশি সকলকে কামড়ে থাকে। তবে যাদের মশা বেশি কামড়ে থাকে তাদের মধ্যে হল - 

'ও' গ্রুপের রক্ত

বেশি ঘুম যাদের

জিনগত

গর্ভবতী নারী

পোশাকের রং

'ও' গ্রুপের রক্তঃ 'ও' পজেটিভ এবং 'ও' নেগেটিভ গ্রুপের রক্ত মশাকে আকর্ষণে বিশেষ ভূমিকা রাখে। 'ও' পজেটিভ এবং 'ও' নেগেটিভ রক্তের গ্রুপে বিশেষ ধরনের একটি গন্ধ থাকে যা মশাকে আকৃষ্ট করে। এবং এই রক্তের গ্রুপ যাদের মশা তাদের আক্রমণ বেশি করে থাকে।

বেশি ঘুম যাদেরঃ সাধারণত ভাবে বেশি গরমে দেহে তাপমাত্রা বেশি থাকলে শরীর থেকে ঘাম ঝরে থাকে। আর মানুষের শরীর থেকে এই ঝরে যাওয়া ঘামের ভেতর এক ধরনের ল্যাকটিক এসিডের গন্ধ পাওয়া যায়। এই গন্ধ মশাদের বেশ প্রিয়।

জিনগতঃ জিনগত কারণে কোন কোন মানুষের শরীরে স্বাভাবিকভাবে মশা প্রতিরোধ থাকে। এজন্য মশা কাউকে বেশি  আবার কাউকে কম কামড়ে থাকে। 

গর্ভবতী নারীঃ গর্ভবতী নারীরা বিশেষ করে তিন মাসের সময় অন্য নারীদের চেয়ে গড়ে ২১ শতাংশ বেশি কার্বন-ডাই-অক্সাইড বাতাসে ছাড়েন। আর এ ঘটনা মশাকে বেশি আকৃষ্ট করে এবং গর্ভবতী নারীদের আক্রমণ বেশি করে থাকে তুলনামূলকভাবে এদের মশা বেশি কামড়ায়। 

পোশাকের রংঃ গাঢ়  রং মশা বেশি পছন্দ করে যেমন লাল, নীল এ ধরনের পোশাক পরিধান করলে মশা বেশি কামড়ে থাকে।

কিভাবে মশার নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম সম্ভব

ডেঙ্গু জ্বরের লক্ষণ ও প্রতিকার সম্পর্কে জানার পর আপনাদের জানতে হবে কিভাবে মশার নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম সম্ভব করা যায়। তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক কিভাবে মশার নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম সম্ভব-

ডেঙ্গু বাহক নিয়ন্ত্রণ বলতে ডেঙ্গুর প্রতিশোধক হিসেবে পরিচিত। ডেঙ্গুর বিরুদ্ধে কার্যকর কোন ঔষধ বা প্রতিষেধক নেই দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতায় কেবলমাত্র রোগের বিরুদ্ধে লড়তে পারে। 

সাধারণভাবে ক্লাসিক্যাল ডেঙ্গুর বিরুদ্ধেই দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা থাকে কিন্তু রক্তক্ষরণ ডেঙ্গুতে বেশিরভাগ রোগী মারা যায়। তাই মশার বিরুদ্ধে নিয়ন্ত্রণ পরিচালিত হওয়া অত্যন্ত আবশ্যক। বাংলাদেশের ডেঙ্গু মশার নিয়ন্ত্রণের জন্য উল্লেখযোগ্য কোন কার্যক্রম দেখা যায় না। 

আবার বাংলাদেশের কোন কোন জায়গায় মশা নিয়ন্ত্রণের কার্যক্রম থাকলেও এডিস মশা নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম নেই। তাই এডিস মশার নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম বিশেষ উদ্যোগ থাকার প্রয়োজন। যেহেতু পানি ভর্তি পাত্রে এ মশা বৃদ্ধি পায় তাই সাধারণভাবে কীটনাশক ছড়িয়ে মশা নিধন করা সম্ভব নয়।

আরো পড়ুনঃ শীতকালে সুস্বাস্থ্য ও খাদ্য তালিকা কি জেনে নিন 

তবে ঘরে চারদিকে স্প্রে এবং খুব সকালে বা সন্ধ্যার শেষে ঘরে বিষ ধোয়া দিলে দিনের বেলা দংশনকারী  মশা কিছুটা নিয়ন্ত্রণ করা যেতে পারে। মশা একটি ছোট পতঙ্গ। এর দমন পদ্ধতি বা নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম হতে হবে বিজ্ঞানসম্মত। পৃথিবীর অনেক দেশেই এই ডেঙ্গু মশার সমস্যাটি রয়েছে। তবে আমাদের দেশে প্রকোপ।

যে কারণে বিজ্ঞানসম্মত পদ্ধতি কাজে লাগিয়ে উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করে মশা নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম প্রচেষ্টা করতে হবে। মশা দমনের পদ্ধতিকে আধুনিকায়ন করতে হবে। মশার নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করার জন্য একটি মশার নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র প্রতিষ্ঠাতা করা যেতে পারে। যার মাধ্যমে মশা নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম নিয়মিত পরিচালনা করা যাবে।

এবং জনসচেতনতা বাড়ানোর পদক্ষেপ নেওয়া যাবে। সকল নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমের জন্য প্রয়োজনের গবেষণা করাও সম্ভব। জনসচেতনতার গুরুত্ব আরোপ করতে হবে। তা না হলে একটি সংস্থার পক্ষে কোনভাবেই মশা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়। পৃথিবীতে মশাবাহিত অনেক রোগ থাকলেও ডেঙ্গু জ্বর একটি অন্যতম রোগ। 

তাই আতঙ্কিত না হয়ে সকলে নিজ নিজ স্থান থেকে মশার নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম প্রচেষ্টা চালাতে হবে। বাড়ির আশপাশ, স্কুল-কলেজ, শিল্প কারখানা ইত্যাদিতে কোথাও যেন পানি জমে না থাকে সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে এবং পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। 

এক কথায় বলা যায় যে, সবাই মিলে সচেতনতার মাধ্যমে মশার নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম সম্ভব। আশা করছি, উপরের আলোচনা থেকে বুঝতে পেরেছেন ডেঙ্গু জ্বরের লক্ষণ ও প্রতিকার সম্পর্কে।

লেখকের শেষ মন্তব্য

ডেঙ্গু জ্বরের লক্ষণ ও প্রতিকার সম্পর্কে জেনে নিন। এই বিষয়ে আলোচনা শুরু করে বিস্তারিতভাবে ডেঙ্গু জ্বর সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। আপনি যদি ডেঙ্গু জ্বর সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে ধারণা পেতে চান তাহলে অবশ্যই আপনাকে আমাদের এই আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ মনোযোগ সহকারে পড়তে হবে। তাহলে আপনি খুব ভালোভাবেই ডেঙ্গু জ্বর সম্পর্কে যে সকল তথ্য রয়েছে সেগুলো জানতে পারবেন।

আশা করছি আপনি ডেঙ্গুজ্বর সম্পর্কে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জেনেছেন। এতক্ষণ আমাদের আর্টিকেলের সঙ্গে থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। এই ধরনের গুরুত্বপূর্ণ এবং তথ্যমূলক আর্টিকেল যদি আপনি নিয়মিত জানতে চান তাহলে আমাদের ওয়েবসাইট ফলো করতে থাকুন।

সবশেষে বলব, এই আর্টিকেল পোস্টটি আপনার কেমন লেগেছে মন্তব্য করে জানাবেন। আপনার পরিচিত আত্মীয়-স্বজন ও বন্ধুদের মধ্যে শেয়ার করে দেবেন। ধন্যবাদ !


এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

ডিজিটাল মার্কেটিং আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্টে রিভিউ করা হয়।

comment url

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ১

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ২

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৩

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৪