শীতকালের প্রকৃতি এবং মানুষের জীবন যাপন সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন
আপনাদের জন্য আমার আজকের এই আর্টিকেল পোস্টে থাকছে, শীতকালের প্রকৃতি এবং মানুষের জীবন যাপন সম্পর্কে বিস্তারিত ব্যাখ্যা। এই আর্টিকেল পোস্টটি সম্পন্ন মনোযোগ সহকারে পড়ুন। আশা করছি, পোস্টটি আপনার ভালো লাগবে।
ছয়টি ঋতুর মধ্যে একটি অন্যতম ঋতু হলো শীতকাল। প্রত্যেকটি ঋতুই নিজস্ব কিছু বৈশিষ্ট্য নিয়ে সংঘটিত। তাই শীতকালের প্রকৃতি এবং মানুষের জীবন যাপন সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছি আজকের এই আর্টিকেল পোস্টে।
পোস্ট সূচিপত্রঃ শীতকালের প্রকৃতি এবং মানুষের জীবন যাপন সম্পর্কে জানুন
- শীতকালের প্রকৃতি এবং মানুষের জীবন যাপন সম্পর্কে বিস্তারিত
- শীতকালের আগমন
- শীতকালের প্রকৃতি
- শীতকালে মানুষের জীবন যাপন
- শীতকালে গ্রাম বাংলার জনজীবন
- শীতকালে শহরের মানুষের জনজীবন
- শীতকালে সুবিধা
- শীতকালে অসুবিধা
- পরিশেষে আমার মন্তব্য
শীতকালের প্রকৃতি এবং মানুষের জীবন যাপন সম্পর্কে জেনে নিন
প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি বাংলাদেশ। ষড়ঋতুর এমন দেশে প্রত্যেক ঋতু তার নিজস্ব বৈশিষ্ট্য নিয়ে আবির্ভূত হয়। পৌষ ও মাঘ মাস শীতকাল হলেও অগ্রহায়ন মাস থেকে শীতের আগমন ঘটতে শুরু করে। মেরু এবং নাতিশীতোষ্ণ জলবায়ুতে শীতকাল সবচেয়ে ঠান্ডা এবং অন্ধকার ঋতু হয়ে থাকে। এটি শরতের পরে এবং বসন্তের আগে ঘটে।
কখনো কখনো অনেক শীত পড়ে। আর এই হার কাপানো শীতে মানুষ, জীবজন্তুর পাশাপাশি প্রকৃতিও অসার হয়ে পড়ে। জনজীবনে শীতের বিশেষ প্রভাব পড়ে। এ সময় জনজীবন অনেকটাই বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। বিশেষ করে ছিন্নমূল বা দরিদ্র মানুষের কষ্টের সীমা থাকে না।
বৃত্তহীন ও গরিব মানুষের জীবনে দুর্যোগ হয়ে দেখা দেয় শীতকাল। আর এ সকল বিষয়গুলোই ফুটে উঠেছে শীতকালের প্রকৃতি এবং মানুষের জীবন যাপন এই আর্টিকেল পোস্টটির মধ্যে তাহলে চলুন এবার জেনে নেওয়া যাক শীতকালে প্রকৃতি এবং মানুষের জীবনযাপন সম্পর্কের বিস্তারিত বিষয় সমূহ।
শীতকালের আগমন
সুজলা -সুফলা , শস্য- শ্যামলা আমাদের এই বাংলাদেশ। বছরে বারটি মাস ছয়টি ঋতু। এর মধ্যে রয়েছে শীতকাল। এক একটি ঋতু এক একটি বৈশিষ্ট্যে গঠিত হয়েছে। তেমনি শীতকালে নির্দিষ্ট কিছু বৈশিষ্ট্য কাঠামো রয়েছে। শীতকালের প্রকৃতি ও মানুষের জীবন যাপন এ বৈচিত্রের তারতম্য লক্ষ্য করা যায়।
বাংলাদেশের ছয়টি ঋতু হল গ্রীষ্ম, বর্ষা, শরৎ, হেমন্ত ,শীত ও বসন্ত এর ঋতুগুলোর মধ্যে পঞ্চম ঋতু হলো শীতকাল। পৌষ এবং মাঘ এই দুই মাস নিয়ে মূলত শীতকাল হলেও অগ্রহায়ণ মাস থেকেই শুরু হয়ে যায় শীত। বৈচিত্র্যময় দেশে গরম বিদায় নেই আর শীতের আগমন ঘটে। আর দেখা মেলে শীতকালের প্রকৃতি ও মানুষের জীবন যাপনের বৈচিত্র্যতা।
ষড়ঋতুর এই দেশে অন্যান্য ঋতুর সাথে শীতকালের ভিন্নতা লক্ষ্য করা যায় । মানবজীবন কখনো দুর্বিষহ হয়ে ওঠে আবার কখনো উৎসবমুখর হয়ে ওঠে। যেহেতু শীত শব্দটি ঠান্ডা এই শব্দটির সঙ্গে পরিচিত।সে ক্ষেত্রে অতিরিক্ত ঠান্ডায় গড়ে ওঠে অসহায়দের মধ্যে দুর্বিসহ চিত্র। যেমন ঠান্ডায় প্রয়োজন পরে গরম পোশাকের।
কিন্তু যারা গরিব অসহায় তাদের অনেকেরই গরম পোশাক কেনার সামর্থ্য থাকে না। যে কারণে তারা ঠান্ডায় অনেক কষ্টের মুখোমুখি হয়।অপরদিকে উৎসবমুখর বলতে শীতকালে দেখা মেলে নানা রকমের পিঠা পুলির উৎসব।
শীত ঋতুতে প্রচন্ড ঠান্ডা পড়ে। দেখা মেলে না বৃষ্টির, ফলে মাঠ ঘাট হয়ে পরে রুক্ষ, ফসলের ক্ষেতে ধরে ফাটল।এভাবেই শীতকালের প্রকৃতি এবং মানুষের জীবন যাপন এর পরিবর্তনের মধ্য দিয়েই ঘটে শীতের আগমন।
শীতকালের প্রকৃতি
শীতকাল হয় শীতল ঠান্ডা আবহাওয়ার প্রকৃতি। প্রচন্ড শীতে প্রকৃতিও যেন নিস্তব্ধ হয়ে যায়। মাঝে মাঝে হিমেল হাওয়া বয় ফলে হার কাপানো শীত পড়ে। যার যতটুকু সাধ্যমত শীতের পোশাক পরিধান করে। শীতকালে এদেশে বেশ কিছু ফুল ফুটে থাকে, যেমন সূর্যমুখী, ডালিয়া, গোলাপ, গাদা ইত্যাদি। শীতকালে শোভা বর্ধন ফুলের সমাহার দেখা যায়।
শীতকালে ফুলের দোকানগুলিতে বিভিন্নভাবে সুসজ্জিত ফুলের সমাহার দেখা যায় এবং বিয়ের অনুষ্ঠানেও ফুলের ব্যবহারের দেখা মেলে। শীতকালে সকালের প্রকৃতি থাকে কুয়াশায় ঢাকা। রাস্তাঘাট, সবুজ ঘাস, ধানের ক্ষেত, গাছপালা থাকে শিশির ভেজা। আবার ধান ক্ষেতে শিশির বিন্দুর ওপর যখন সূর্য রশ্মি পড়ে তখন ঝলমল করে, একপ্রকার মুক্তার মতই দেখা যায়।
কুয়াশা ঢাকা শীতের সকালে দেখা মেলেনা সূর্যের। ঘন কুয়াশার কারণে আশেপাশে দূরে কোন কিছু দেখা যায় না। আবার শীতকালে দীর্ঘদিন বৃষ্টি না হওয়ার ফলে প্রকৃতিতে আসে ভিন্নতা, যেমন মাঠ ঘাট ফেটে চৌচির হয়ে যায়। একেবারে পানি শূন্য হয়ে পড়ে। শীতকালে বিভিন্ন গাছ পালার পাতা ঝরে পড়ে আবার নতুন পাতার জন্ম নেই।
শীতকালে লাল শাক, পালং শাক ,গাজর, টমেটো, মুলা, বরবটি ইত্যাদি বিভিন্ন ধরনের শাক-সবজিতেও প্রকৃতি শোভা বর্ধন করে। আবার শীতকালের প্রকৃতি এবং মানুষের জীবন যাপন এ উৎসবের আমেজও লক্ষ্য করা যায়। শীতকালে খেজুরের রসের মাধ্যমে খেজুর গাছে প্রকৃতি শোভা বর্ধন করেছে। খেজুরের রস থেকে আবার খেজুরের গুড় তৈরি করা হয়ে থাকে।
যা অনেকের কাছেই প্রিয়। শীতকালের প্রকৃতি শোভা বর্ধনের মধ্যে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য সরিষা ক্ষেত। মাঠের পর মাঠের বিস্তার ঘটে সরিষা ক্ষেতের। সরিষা ক্ষেতের সরিষা ফুলের উপরে মৌমাছির গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়ে। শিশির ভেজা বন জঙ্গলে মধুর সুরে পাখিরা গান গাই। শীতকালের বিকেল বেলায় নদী নালা খাল বিলে স্থির জলের ওপর সূর্যের রশ্মি পড়ে।
নদী নালা খাল বিলের পানি গুলো ঝিকমিক করে। দেখতেই লাগে কতই না মনোমুগ্ধকর। বিকেল বেলায় ঢলে পড়া সূর্যের মৃদু আলোর প্রতিচ্ছবি দেখতে লাগে কত না সুন্দর। তীব্র শীতে মানুষ ও জীবজন্তুর সাথে প্রকৃতিও অসার হয়ে পড়ে। শীতকালে সকালের সময়টা তাপমাত্রা খুবই কম থাকে। মাঝে মাঝে আবার শৈত্য প্রবাহ বয় ফলে তাপমাত্রা খুবই নিম্ন হয়ে যায়।
শীতকালে মানুষের জীবন যাপন
শীতের আগমনটা যেহেতু ঘটে শীত দিয়ে। সেই ক্ষেত্রে মানুষের জীবন যাপনেও কিছুটা পরিবর্তন চলে আসে, যেমন তীব্র শীতে কষ্ট যেন না পায়, সেজন্য মানুষ গরম পোশাক কেনার জন্য ছোটাছুটি শুরু করে দেয়। শীতের হাত থেকে দরিদ্র অসহায় মানুষেরা বাঁচতে আপ্রাণ চেষ্টা করে। শীতকালের সময় শীতের সকালে গ্রামাঞ্চলের মানুষজন আগুনের কুণ্ডলী তৈরি করে উত্তাপ গ্রহণ করে।
আর এই আগুন জ্বালিয়ে উত্তাপ নেওয়ার মাঝেও আছে আলাদা অনুভূতি। শীতকালের প্রকৃতি এবং মানুষের জীবন যাপন এ শহর এবং গ্রামে উভয় জায়গাতেই শিশু যুবক বা বৃদ্ধা সহ সব বয়সের মানুষকে আগুনের কুণ্ডলী তৈরি করে উত্তাপ নিতে দেখা যায়। শীতের সকালে চায়ের দোকানগুলোতে জমে ভিড়।
শীতের সকালে শহর বা গ্রামে শিশু যুবক বা বৃদ্ধসহ সব বয়সের মানুষকেই শীতের পোশাক পরিধান করে রাস্তাঘাটে চলাফেরা করতে দেখা যায়। শীতের সকালে কুয়াশায় মোড়া থাকে প্রকৃতি পরিবেশ। অনেক দেরিতে সূর্য ওঠে বিধায় মানুষরাও ঘুম থেকে উঠতে দেরি করে বা অলসতা বোধ করে। কুয়াশাতে সমস্ত কিছু ঢেকে থাকে আশেপাশে কিছু দেখা যায় না।
কখনো কখনো ঘন কুয়াশার সাথে ঝিরঝিরি করে শিশির পড়ে। গ্রামাঞ্চলের মানুষরা শীতের সকালে খেজুরের রস সরবরাহ করে। আবার কখনো ঘন কুয়াশার কারণে সূর্যের দেখায় মেলেনা। তবুও শীতকালের প্রকৃতি এবং মানুষের জীবন যাপন এর নিত্য প্রয়োজনের জন্য চাদর মুড়িয়ে শীতের পোশাক জড়িয়ে কাজের সন্ধানে ছুটে বের হতে হয়।
শীতের সকাল বেলায় গ্রামে ও শহরে পাখির সুমধুর কন্ঠে কিচিরমিচির ডাকে মানুষের ঘুম ভাঙ্গে। চায়ের দোকানগুলোতে জমে আড্ডা। সাজ পোশাকেও ভিন্নতা লক্ষ্য করা যায় । বাহারি রকমের রংবেরঙের পোশাক এর সমাহার দেখলে চোখ জুড়িয়ে যায়। গ্রামের ছেলে মেয়েরা ঘুম থেকে সকাল সকাল উঠে।
তারা হাতে একটি ব্রাশ নিয়ে বাড়ির আশেপাশে ঘোরাফেরা করে রাস্তার আশপাশ দিয়ে হাঁটাহাঁটি চলাফেরা করে। এ সময় ঘাসের আগায় শিশির বিন্দু জমে থাকে আর শিশির কণাগুলো মুক্তোর মত চকচক করে। কেউবা আবার খেজুরের রস সংগ্রহ করার পর সেগুলো গুড় তৈরির কাজে ব্যতিব্যস্ত হয়ে পড়ে।
বাংলাদেশের দর্শনীয় স্থান এবং পিকনিক স্পট গুলোতে শীতকালে ভ্রমণকারীদের আনাগোনা দেখা যায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে শিক্ষা সফর শুরু হয়। তাছাড়াও গ্রামের হাটবাজারে বা উন্মুক্ত স্থান সহ সর্বত্র পিকনিকের আয়োজন বেড়ে যায় । শীতকালে গ্রামের ক্ষেত গুলোতে ধান কাটা শুরু হয়। পাকা ধানের সোনালি ক্ষেতে ভরপুর, যা দেখে দৃষ্টি ফেরানো যায় না।
ধান কাটা শেষ হয়ে গেলে আবার আবাদ করার জন্য জমি প্রস্তুত করে। বাংলাদেশের প্রকৃতি অপরূপ সাজে সজ্জিত বলে শীতকালে একটি নির্দিষ্ট রূপসজ্জিত হয়েছে। শীতকালের প্রকৃতি এবং মানুষের জীবন যাপন এর জন্য ঘরে ঘরে দেখা যায় নানা ধরনের পিঠাপুলির আয়োজন।
বাংলাদেশের বিশেষ কিছু পরিচিত পিঠার নাম ঃ ভাপা পিঠা, দুধ পিঠা, খেজুরের রসের পিঠা, পুলি পিঠা, চিতই পিঠা, নকশী পিঠা, বকুল পিঠা, পাটিসাপটা পিঠা, কুষলি পিঠা, কলা পিঠা, খির কুলি পিঠা, ঝিনুক পিঠা, মোয়া পিঠা এবং চিড়ার মোয়া পিঠা ইত্যাদি।
শীতকালে গ্রাম বাংলার জীবন যাপন
শীতকালে সকালে প্রকৃতিতে নেমে আসে বৈচিত্র। বাংলাদেশের প্রাকৃতিক দৃশ্যের সাথে জড়িয়ে আছে গ্রাম বাংলার শীতকালের প্রকৃতি এবং মানুষের জীবন যাপন। শীতের সকালের গাম বাংলার জনজীবনে খেজুরের গুড়ের মৌ মৌ গন্ধে বাতাস মুখরিত হয়। বাড়ির উঠোনে কিংবা বাড়ির আশেপাশে আবার চুলার পাশে আগুনের কাছে বসে থাকতে দেখা যায়, বিভিন্ন বয়সের মানুষজনকে।
রাস্তার পাশে চায়ের দোকানে জমে আড্ডা। গল্পের আসর জমিয়ে দেয় আর চা খাই। শীতকালে গ্রাম বাংলার মানুষ নানা ধরনের পিঠাপুলি তৈরি করে থাকে। শীতকালে মানুষ লেপ কাঁথা মুড়ে দিয়ে ঘুমায়। কোথাও বের হতে গেলে সোয়েটার বা চাদর গায়ে দিয়ে বের হয়। সূর্যের আলোর উষ্ণতাপ নেওয়ার চেষ্টা করে।
আগুনের কুণ্ডলী পাকিয়ে চাদর মুড়ে ও সোয়েটার গায়ে দিয়ে শীতকালের তীব্র শীত নিবারণের চেষ্টা করে। শীতকালের সকালে গ্রামাঞ্চলে পাখির কলরব বেশি শোনা যায়। আর এই পাখির কলরবে মানুষের ঘুম ভাঙ্গে। সূর্য উঠতে দেরি হয় বলে কেউবা আবার ঘুম থেকে উঠতে দেরি করে। শীতের বিকেলে জমে গল্পের আসর।
নদীর ধারে বা নীরব স্থানে। গ্রাম বাংলার মানুষের জীবন যাপন খুবই সাধারণ। এক কথায় গ্রাম বাংলায় শীতকালে প্রকৃতি এবং মানুষের জীবন যাপন অপরূপ সাজে সজ্জিত হয়। গ্রাম বাংলার জনজীবনে শাক সবজির প্রকৃতি পরিবর্তন আনে।
সকালে বা বিকেলে সর্বসময় মানুষ একটু গরমের উষ্ণ ভাব থাকার চেষ্টা করে। গ্রাম বাংলার প্রকৃতি নানা ধরনের ফুলে শোভা বর্ধন করে থাকে। কৃষ্ণচূড়া ফুল ফোটে যা দেখলে চোখ জুড়িয়ে যায়। এই হল আমাদের গ্রাম বাংলার শীতকালের প্রকৃতি এবং মানুষের জীবন যাপন।
শীতকালে শহরের মানুষের জীবনযাপন
শীতকালের প্রকৃতি এবং মানুষের জীবন যাপন এর মধ্যে শহরের জীবনযাপন একটু ভিন্নতা বয়ে নিয়ে আসে। শহরের মানুষরা সকালে ঘুম থেকে উঠে দেরিতে। গ্রামের মানুষদের মতো শহরে মানুষজন সকালে ঘুম থেকে পাখির কলরবে না উঠলেও কাকের ডাকে উঠে যায়। তবে ছুটির দিনে তারা বিছানা ও লেপ ছেড়ে উঠতে চায় না।
শহরের মধ্যে খুব বেশি লোকের সমাগম দেখা যায় না গ্রামের মতো। এখানে ওখানে বসে না গানের আসর, চায়ের আসর। গ্রামের মানুষ এবং শহরের মানুষের মধ্যে পোশাকের ও তারতম্য দেখা যায়। গ্রামের মানুষরা খুব বেশি শীতের পোশাক পায় না। অপরদিকে শহরের বড়লোক মানুষরা পোশাকের রকমারি বয়ে নিয়ে আসে।
শহরের মানুষদের গ্রামের মতো আগুনের কুণ্ডলী নিয়েও বসে থাকতে দেখা যায় না। খেজুরের রস সরবরাহ করতে দেখা যায় না। শীতের সকালে গুড়ের মিষ্টি গন্ধে বাতাস মুখরিত হয় না বা মুগ্ধ হয় না। দেখা যায় না সরিষা ক্ষেত। ধান ক্ষেত ও ধান কেটে ঘরে তোলার দৃশ্য। পিঠা পুলির উৎসবে গ্রাম এবং শহরের কিছুটা সাদৃশ্য রয়েছে।
শহরের রাস্তাগুলো শীতে শিশিরে ভিজে থাকে। শহরের মানুষরা শীতের সকালকে গ্রামের মানুষের মতো উপভোগ করতে পারে না। কুয়াশা ঢাকা বিস্তৃত রাস্তা থাকলেও শিশির ভেজা ঘাস উপলব্ধি করার মত নেই ,শুধু আবেগের।
শহরের মানুষরা যান্ত্রিক জীবনে অভ্যস্ত তাদের গ্রামের মানুষের মতো সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত শিশির ভেজা ঘাস এসব দেখার মতো মনমানসিকতা নেই। শীতকালের শহরের জনজীবনে গ্রামের মত প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে অপরূপ সাজে সজ্জিত থাকে না। গ্রাম বাংলার গ্রামীণ জীবন অসম্ভব সুন্দর ও মনোমুগ্ধকর শহরের জীবন যাপনের থেকে।
শীতকালে সুবিধা
শীতকালের প্রকৃতি এবং মানুষের জীবন যাপন এর মধ্যে বিশেষ কিছু সুবিধা মনে পড়ে যায়। যেমন- শীতকালের সুবিধায় বিভিন্ন ধরনের শীতকালীন ফসলের কথা,শাক-সবজি, নানা ধরনের পিঠা, শোভাবরধন ফুল, ও আনন্দ ভ্রমনের কথাও মনে পড়ে যায়। শীত ঋতু আছে বলেই আমাদের শীতকালের প্রকৃতি অপরূপ সাজে সজ্জিত।
সরিষা ক্ষেতের দৃশ্য, মাঠের পরে মাঠ ভর্তি সোনালী ধান ক্ষেত দেখার সৌভাগ্য হয়। শীতকালে কৃষকের ঘরে ঘরে ওঠে আমন ধান। চারিদিকে জাগে নবান্নের উৎসব। খেজুরের রস, চিড়া, মুড়ি, পিঠা, পায়েস, খেজুরের গুড়ের মিষ্টি সুবাসে চারদিক আমোদিত থাকে।শীতকাল আছে বলেই বিভিন্ন ধরনের শোভা বর্ধন ফুল-এর দেখা মেলে।
আর এই শোভা-বর্ধন ফুল গুলো বাংলার প্রকৃতিকে এক অপরূপ সাজে সজ্জিত করে তোলে।আবার শীতকালে দেখা মেলে শীতকালীন শাক-সবজির। গ্রামের হাট বাজার গুলোতে বিভিন্ন ধরনের শীতকালীন সবুজ শাক-সবজির আমদানি হয়ে থাকে। যেগুলো অন্য ঋতুতে খুব একটা বেশি দেখা যায় না। এ সময় টাটকা মাছ, তরি-তরকারি ও শাকসবজি পাওয়া যায়।
শীতকালে তাপমাত্রা কম হওয়ায় আবহাওয়া থাকে ঠান্ডা ফলে অতিরিক্ত বিদ্যুৎ খরচ থেকে বিরত থাকা যায়। ঘর ঠান্ডা রাখার জন্য এসির প্রয়োজন হয় না। শীতকালে ফ্যান চালানোর প্রয়োজন হয় না। কেননা শীতকালের ঠান্ডা আবহাওয়ার কারণে ফ্যান ছাড়াই শরীরকে ঠান্ডা রাখা যাই। আরো মনে পড়ে যায় পানি অপচয় রোধ করা।
কেননা গরমের সময় একটু পর পর পানির ব্যবহারের প্রয়োজনীয়তা বেড়ে যায় গোসল করার ক্ষেত্রে। কিন্তু শীত কালে ঠান্ডার কারণে গোসলের কথা মনে হলেই মনে ভয় সৃষ্টি হয়। ফলে অতিরিক্ত পানি খরচ থেকে বিরত থাকতে পারা যায়। শীতের দিনে বেশি পরিশ্রম করা যায়, সহজে ক্লান্তি আসে না। তাছাড়া মশা-মাছির উপদ্রবও থাকে অনেকটা কম।
শীতকাল বনভোজনের জন্য উপযুক্ত সময় বলে বিভিন্ন ঐতিহাসিক স্থানে ভ্রমণ করার সুযোগ মিলে। শীতকাল শিক্ষা সফরের জন্য একটি নির্দিষ্ট সময় বলে বিবেচিত হয়ে থাকে। ফলে বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্রে ভ্রমণ করার সুবিধা মিলে। ফলে আমরা ভ্রমণের মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের তথ্যমূলক শিক্ষা লাভ করে থাকি। এভাবে আমরা শীতকালে নানা ধরনের প্রতিকূল পরিবেশের মধ্য দিয়ে সুবিধা ভোগ করে থাকি।
শীতকালে অসুবিধা
শীতকালের প্রকৃতি এবং মানুষের জীবন যাপন যেমন বিভিন্ন ধরনের সুবিধা ভোগ করে থাকে। তেমনি ভাবে শীতকালের বিশেষ কিছু অসুবিধা উল্লেখিত রয়েছে। যেমন নিম্ন আয়ের মানুষেরা শীত নিবারণের জন্য শীতের উপযুক্ত পোশাক পায় না। ফলে শীতে অনেক কষ্ট পেয়ে থাকে। শীতের জীবনটা তাদের জন্য দুর্বিষহ হয়ে ওঠে।
এছাড়া কিছু রোগের আক্রমণও ঘটে থাকে। শীতকালের সর্বপ্রথম যে অসুখটির কথা মনে পড়ে যায় সেটি হল ঠান্ডা জনিত রোগ। শীতকালে ঠান্ডা জনিত রোগের মধ্যে রয়েছে শুকনো কাশি এবং ঠান্ডা লাগার কারণে জ্বর, গলা ব্যথা, জয়েন্টে ব্যথা, ইনফ্লুয়েঞ্জা সহ বিভিন্ন ধরনের রোগ।
ঠান্ডা এ সকল রোগের একমাত্র কারন বলে বিবেচিত হয়ে থাকে। শীতকালে এই ঠান্ডা জনিত রোগে মানুষ বেশি ভোগে থাকে। এছাড়াও ত্বকের সুষ্কতা এই সমস্যাটি শীতকালে অধিকাংশই মানুষের মধ্যে প্রবনতার দেখা মিলে। এভাবে আমরা শীতকালের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা ফেস করে জিবন-যাপব করে থাকি।
পরিশেষে আমার মন্তব্য
পরিশেষে আশা করছি যে, আপনি নিশ্চয় (শীতকালের প্রকৃতি এবং মানুষের জীবন যাপন) এই আর্টিকেল পোস্টটি সম্পূর্ণ মনোযোগ সহকারে পড়েছেন। এবং আপনার ভালো লেগেছে। শীতকালের প্রকৃতি এবং মানুষের জীবন যাপন সম্পর্কে জানতে পেরেছেন।
এই ধরনের গুরুত্বপূর্ণ আর্টিকেল নিয়মিত জানতে হলে, আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করুন। আপনাদের কোন মন্তব্য থাকলে জানিয়ে দিবেন। আর আপনার পরিচিত আত্মীয়-স্বজনদের ও বন্ধুদের কাছে শেয়ার করুন। এতক্ষণ আমাদের আর্টিকেলের সঙ্গে থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ !
ডিজিটাল মার্কেটিং আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্টে রিভিউ করা হয়।
comment url